ছয় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র তিনটি শৌচাগার থাকলেও তার সবগুলোতেই রয়েছে নানা সমস্যা। কোনোটির ট্যাপ ভাঙা, কোনোটির আবার দরজাই নেই। তবে জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে বহুতল ভবন তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিনতলা বিশিষ্ট কলা ভবনের নিচতলায় সাতটি শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বাঁধন, ক্যাম্পাস বার্তা ও সাংবাদিক সমিতির কার্যালয় রয়েছে। সেখানে ছাত্রদের দুটি শৌচাগারের মধ্যে একটি স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, অন্যটি ব্যবহারের অনুপযোগী। দ্বিতীয় তলায় বাংলা, ইংরেজি, আরবি ও ইসলাম শিক্ষা, সমাজ বিজ্ঞান এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় কার্যালয়, সেমিনার ও চারটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। ছাত্রীদের কমন রুম ও নামাজ ঘরও একই তলায়।
নতুন ভবন পাচ্ছে যশোর সদর উপজেলার ১৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়
এছাড়া. তৃতীয় তলায় সমাজকর্ম, ইতিহাস বিভাগের কার্যালয়, সেমিনার কক্ষ ও আটটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। এ তলায় ছাত্রদের একমাত্র শৌচাগারটিও প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী।
স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন ভিক্টোরিয়া কলেজ শাখার সভাপতি জোবাইদা ইয়াসমিন মুমু জানান, নিচতলায় তিনটি সংগঠন রয়েছে। এখানে বিশিষ্ট অনেক ব্যক্তিরা অতিথি হিসেবে আসেন। তবে কোনো শৌচাগার ব্যবহারের উপযোগী না থাকায় তাদের যেমন ভোগান্তি হয়, সংগঠকদেরও বিব্রত হতে হয়।
আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী, সাহিত্য সংগঠন ক্যাম্পাস বার্তার নির্বাহী সম্পাদক মহিউদ্দিন আকাশ জানান, কলা ভবনে ছয় থেকে সাত হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এখানে ক্লাস রুম সংকট, খাবার পানি নেই, শৌচাগার সমস্যাসহ ভবনের দেয়ালের অধিকাংশ স্থান নষ্ট হয়ে গেছে। নিচতলায় কলেজের ম্যাপ ছিল, তাও এখন নেই। নোটিশ বোর্ড বহিরাগতদের বিজ্ঞাপনে সয়লাব হয়ে রয়েছে।
সুনামগঞ্জে ৩৫৫.৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ১৬০টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ভবন
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ইট, বালির তৈরি এ ভবনের বয়স কমপক্ষে ৬০ বছর। এর মেয়াদও প্রায় শেষ। নতুন ভবনের বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র জমা দেয়া হয়েছে। দশতলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন তৈরি করা হবে। সে প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে কয়েক বছর সময় চলে যাবে। তবে শৌচাগার সংস্কারের জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাথে আলোচনা চলছে।’
প্রসঙ্গত, ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর ১৯৬০ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজের উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি শাখা পৃথক করা হয়। মূল শাখা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে শহরতলীর ধর্মপুর এলাকায় তৈরি করা হয় ডিগ্রি শাখা।
১৯৬০ সালে নির্মাণ করা হয় ডিগ্রি শাখার কলা ভবন ও কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল। বর্তমানে এ ভবনে সাতটি বিভাগের অধীনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ছয় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।